সাল 1999, জাপানের নাগাসাকির বাসিন্দা 55 বছর বয়সি নাওকো নিশিমতো-সান একটি নতুন মাজদা RX-7 কিনার সিদ্ধান্ত নেন।
নাম্বার প্লেট হিসাবে ‘নাগাসাকি (長崎)-7’ কে বেছে নেন যা পরবর্তী ২৫ বছর তার সঙ্গী হয়।
নাওকো তার RX-7 কে অনেকটা নিজের সন্তান এর মতো যত্ন এবং আবেগের সাথে চালিয়েছিলেন, কিন্তু তার ৮০ তম জন্মদিনে, নাওকো-সান একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেন তা হলো স্বেচ্ছায় তার ড্রাইভারের লাইসেন্স সমর্পণ করা এবং তার ২৫ বছরের সঙ্গী RX-7 কে মাজদা কোম্পানিকে ফিরিয়ে দেওয়া।
নাওকো-সানের RX-7 এর সাথে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনাটি ব্যাপক এটেনশন লাভ করে তখন , যখন তার গল্পটি 2024 সালের সেপ্টেম্বরে YouTube-এর মাধ্যমে প্রচারিত হয়, যা মানুষকে ব্যাপকভাবে মুগ্ধ করে। মাজদার একজন প্রকৌশলী অনুষ্ঠানটি দেখতে গিয়েছিলেন। বিষয়টি তাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়, সে অবিলম্বে মাজদা’র PR টিমের সাথে যোগাযোগ করে।
এই খবরটি মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়, এবং নাওকো তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে ৪০০ টিরও বেশি ইমেল পান – যার মধ্যে একটি পান মাজদার পাব্লিক রিলেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে ৷
যখন নাওকো-সান মাজদার মেইলটি পড়েন, তখন তিনি হেসে বলেছিলেন, “এটি এমন আন্তরিক একটি ইমেল ছিল যা সত্যিই আমাকে উচ্ছ্বসিত করে।
নাওকো সান তার 25 বছরের সঙ্গীর চূড়ান্ত বিদায়ের আগে, তার ছেলে মাকোতো-সানের সাথে চেরি ফুল দেখতে রোড ট্রিপে গিয়েছিলেন।
এবং তারপরে ১৮ ডিসেম্বর, তার ৮০ তম জন্মদিনের দিন, নাগাসাকির একটি মাজদা ডিলারশিপে একটি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় এবং নাওকো-সান গাড়ির চাবি হস্তান্তর করেন।যাকে তিনি 25 বছর ধরে ভালোবাসার সাথে আগলে রেখেছেন ।
সবশেষে তিনি বলেন “আজ আমি এখানে আমার “7” নিয়ে এসেছি, কিন্তু যাওয়ার সময় একাই চলে যাব। এটি আমার জন্য খুব বেদনাদায়ক। এই গাড়িটি ২৫ বছর ধরে আমার সঙ্গী। আমি এর সাথে প্রতিটি মুহূর্ত এনজয় করেছি, তাই বিদায় নিয়ে আমার কোন অনুশোচনা নেই। আমি শুধু আমার ‘7’-কে একটা শেষ কথা বলতে চাই—ধন্যবাদ। ২৫টি চমৎকার বছর উপহার দেওয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।”
তার RX-7, ২৫ বছরে 77,000 কিলোমিটার (48,000 মাইল) চলেছিলো।
অনুষ্ঠান এবং চাবি হস্তান্তরের পরে, তিনি স্থানীয় থানায় যান এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স সমর্পণ করেন।
এটি কেবল একটি গাড়ির গল্প নয় তারচাইতেও বেশি কিছু। গাড়ি একটি আবেগ, একটি ভালোবাসার নাম, পরিবারের একজন সদস্য । একটা মেশিনের প্রতি কিভাবে এতো শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা আসে তা সবাই বুঝতে পারেন না।
একটা শখের গাড়ি যে কতটা মুল্যবান তা সেই ব্যাক্তি ছাড়া বুঝা কঠিন। একটা গাড়ির সাথে সারাজীবনের হাসি কান্না আবেগ ভালোবাসা যুক্ত থাকে
তাইতো আমি বলি
“A car is not a machine, It is part of our life”
